“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শনিবার, ১৭ মার্চ, ২০১৮

মধ্যরাতের কথকতা

।। অভীক কুমার দে ।।
(C)Image:ছবি

মেয়েটা ঘুমিয়ে পড়েছে বিছানার মাঝ বরাবর। ওরা দুজন দুদিকে উল্টোমুখো। ঘরের আলো নিভে যেতেই একটা অবুঝ শূন্যতা। চারটে তারায় কতগুলো ভাবনা সাঁতার কাটতে কাটতে হঠাৎ সংযোগ হারানো রাতের সুর থেকে রাগের গলন--


স্ত্রী:- সাংসারিক বানরগুলোকে হনুমান সেজে ঘুরলে মানায় না।
স্বামী:- সংসার কী হাওয়ায় চলবে !
স্ত্রী:- তবে উড়ো কেন ? অভিনয় করতে করতে মনে হয় রামায়ণটাকেই গিলে খাবে !
স্বামী:- প্রভুর কৃপায় সব হবে।
স্ত্রী:- মানে ?
স্বামী:- প্রভুর কৃপা না থাকলে তোমার মতো মহিলার কাছে জীবনকে পাষাণ বানিয়ে ভাসাই কেন ?
স্ত্রী:- এতে আমার মতো মহিলার ভালো কী হলো ?
স্বামী:- তোমার সংসার হয়েছে, মায়ের সুখ পেলে, আর কী চাই তোমার !
স্ত্রী:- তোমার সংসার হয়নি ? তুমি বাবা হওনি ?
স্বামী:- আমি মন থেকে ব্রহ্মচারী।
স্ত্রী:- বৌ বাচ্চা যার আছে বাল- ব্রহ্মচারী !
স্বামী:- মা বাবার কথা ফেলতে পারিনি বলে...
স্ত্রী:- আর তোমার প্রভুকে ফিরিয়ে দিলে কীভাবে ? সোহাগের রাতগুলোও তো কম দেখিনি। সময় বদলে যাওয়ায় খোল পাল্টানো ?
স্বামী:- তা নয়। এখন দিনগুলো সব কফিনের দিকে হাঁটছে। কঠিন সময়। প্রভুর কৃপা না থাকলে শ্মশানও জুটবে না।
স্ত্রী:- প্রভুর অবস্থান পেটে না বুকে ?
স্বামী:- মাতা জানবেন।
স্ত্রী:- আমার জানার দরকার নেই। আমার সব ঠিক থাকলেই হবে। উড়ো আর যা খুশি করো। নিজের একটা মেয়ে আছে এটা যেন মনে করে দিতে না হয়।
স্বামী:- আমার সবই মনে থাকে। আর তোমার জানতে হবে কেন ? বলেছি, মাতা জানবেন।
স্ত্রী:- তুমি মন থেকে ব্রহ্মচারী যখন আমিও সবার মাতা হবো ভাবছি।
.

সব চুপ। মাঝরাতে একটি অবুঝ শূন্যতা ঘুম পাড়াতে আসে। তারাগুলো সাঁতার কাটতে কাটতে পাপড়িবন্দী হলেই সংযোগ হারানো মনের গলন অজান্তেই দাগ রেখে যায় বালিশে।


কোন মন্তব্য নেই: